টমেটো খাওয়ার উপকারিতা

টমেটোর উপকারিতা  টমেটোতে কি কি ধরনের ভিটামিন থাকে এই তথ্যগুলি আপনি কি  জানতে আগ্রহী তাহলে এই পোস্টটি শুধুমাত্র আপনার জন্য।আজ আমি এই পোস্টে টমেটোতে কি কি  ভিটামিন থাকে, টমেটো খেলে কি হয় এবং টমেটো খেলে কি উপকারিতা হতে পারে সেই বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।আপনি টমেটোতে কোন ভিটামিন থাকে  এর উপকারিতা জানতে পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন  




আজ আমি এই পোস্টে টমেটো খেলে কি হয় ,টমেটো খেলে কি ওজন কমে ,টমেটো খেলে কি এলার্জি সমস্যা হতে পারে ,কাঁচা টমেটো খাওয়ার উপকারিতাটমেটোতে কোন ভিটামিন থাকে এর উপকারিতা বিস্তারিত জানাবো।আপনি টমেটোতে কোন ভিটামিন থাকে এর উপকারিতা জানতে পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

সুচিপত্রঃ টমেটো খাওয়ার উপকারিতা-

  • টমেটো খাওয়ার উপকারিতা
  • ত্বকের যত্নে
  • কাঁচা টমেটো খাওয়ার উপকারিতা
  • গর্ভাবস্তায় টমেটো খাওয়ার উপকারিতা
  • টমেটো মুখে দিলে কি হয়
  • টমেটো ও লেবুর ফেসপ্যাক
  • ওজন কমাতে

টমেটো খাওয়ার উপকারিতা-

টমেটো একটি শীতকালীন সবজি যা আমাদের দেহে ভিটামিনের অভাব পূরণ করে। এছাড়া এটি প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ফল যা শীতকালীন সবজি হলেও সারা বছর আমাদের দেশে পাওয়া যায়। আমরা অনেকেই জানিনা এই পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ সবজিটি শরীরের বিভিন্ন উপকারে অসামান্য অবদান রাখে।এত রয়েছে ভিটামিন -, ভিটামিন- কে, ভিটামিন - এবং ভিটামিন- ৬।এছাড়াও এতে রয়েছে ভিটামিন সি যা শরীরের বিভিন্ন  প্রতিরোধ করতে সক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।

টমেটোতে কোন কোন ভিটামিন থাকে তা বা কত গুলো পুষ্টি উপাদান থাকে তা দেখুন-

প্রতি ১০০ গ্রাম টমেটোতে যে সব উপাদান পাওয়া যায়-প্রতি ১০০ গ্রাম টমেটোতে রয়েছে ৩৫১ মাইক্রো গ্রাম ক্যারোটিন.১৩ মি.গ্রা থায়ামিন, .০৬মি.গ্রা রিবোফ্লেভিন.৪০ মি.গ্রা লৌহ থাকে,৪৮ মি.গ্রা ক্যালসিয়াম থাকে,২০ মি.গ্রা ফসফরাস। এছাড়া ১০০ গ্রাম কাঁচা টমেটো ১৮ কিলো ক্যালোরি সরবরাহ করে এবং এটি ভিটামিন সি (দৈনিক মানের ১৭%)এছাড়া নিয়মিত টমেটো হওয়ার অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে- 

টমেটো রয়েছে ভিটামিন সি যা মানুষের স্নায়বিক  চাপ কমাতে সহযোগিতা করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ পুষ্টিগুণ থাকায় রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা করে।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়-

টমেটোতে  লাইক নামক পিগমেন্ট পাওয়া যায় ।এছাড়াও রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধিতে বাধা প্রদান করে তাই টমেটো খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়। প্রাপ্তবয়স্ক সবারই প্রতিদিন কমপক্ষে এক থেকে দুইটি টমেটো খেলে শরীরের কার্যক্ষমতা বেড়ে যায়।

tttত্বকের যত্নে-

আমাদের দেশে অনেকেই সানবার্ন(এক ধরনের বিকিরন পোড়া হল সানবার্ন যা জীবন্ত টিস্যুযেমন ত্বক কে প্রভাবিত করেসমস্যায় ভুগেন।আর আপনি যদি টমেটো খান তাহলে টমেটোতে থাকা ভিটামিন উপাদান আপনার এই সমস্যাটি দূর করবে।

চোখের দৃস্টিতে- 

খাদ্য ঘাটতির কারনে অনেক মানুষের দেহে ভিটামিন এর অভাব রয়েছ।এর প্রভাবে চোখের দৃস্টির সমস্যা দেখা যায়। টমেটোতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন- তাই পাকা টমেটো খেলে ইহা শরীরে ভিটামিন- এর অভাব পূরণ করে।

আরো পড়ুনঃটমেটোর কি কি রোগ হতে পারে

কাঁচা টমেটো খাওয়ার উপকারিতা-

অনেকেই সালাদ হিসাবে কাঁচা টমেটো আহার করেন, যা শরীরের জন্য বেশ উপকারি। কেননা এতে থাকা লাইকোপিন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হৃদযন্ত্রের সুরক্ষা দেয়। এছাড়া এতে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম   ভিটামিন-বি পটাসিয়াম পাওয়া যায়, যা হাড়ের ক্ষয় রোধ করে হাড়কে মজবুত রাখে এবং বাতের ব্যথা নিয়ন্ত্রন করে।

গর্ভাবস্থায় টমেটো খাওয়ার উপকারিতা-

গর্ভাবস্থায় মহিলারা তাদের খাদ্য তালিকার মধ্যে সবজি ফলমূল রাখা উচিত। এমনঅবস্থায় মহিলারা অনেকেই মনে করেন যে টমেটো খাওয়া তাদের জন্য সঠিক হবে কিনা। সে ক্ষেত্রে বলা বাহুল্য কোন জিনিস অতিরিক্ত আহার ভালো নয় ।কিন্তু পরিণত পরিমাণ টমেটো আহার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী ।টমেটো তো রয়েছে কার্বোহাইড্রেট যা গর্ভবতী মহিলাদের আলস্য  কাটাতে এবং হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক।এছাড়া কার্বোহাইড্রেট গুলো শিশুর ব্রেনের স্বাস্থ্যকর বিকাশে সহায়তা করে। এছাড়া টমেটোতে রয়েছে ভিটামিন-সি যা শিশুর ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে ।টমেটোতো পাওয়া যায় শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লাইকোপেন যা শিশুদের কোষের ক্ষয় জন্মগত অক্ষমতা দূরীকরণে সাহায্য করে। তাছাড়া লাইকোপেন ক্যান্সার বৃদ্ধিতে সহায়ক কোষগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিরোধে লড়াই করতে পারে ফলে গর্ভবতী মহিলার জরায়ুর ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারে।সর্বোপরি পরিমিত টমেটো আহার গর্ভকালীন সময়ে সৃষ্ট মহিলাদের ডায়াবেটিস চাপ কমাতে সাহায্য করে।

ওজন কমাতে-

অনেক গবেষণা দেখা গেছে যে ,টমেটোতে রয়েছে অ্যামাইনোফেটি এসিড যা ফ্যাট বা চর্বি কমাতে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে , তাই যারা স্বাস্থ্য সচেতন, নিয়মিত শরীর চর্চা করেন এবং যারা নিজেকে স্লিম দেখাতে চান তাদের জন্য টমেটো খুবই উপকারি একটি সবজি।

 

আরো পড়ুনঃহার্টের জন্য শসা কতটা উপকারী তা জেনে নিন


পাকা টমেটো খেলে কি হয়-

আমাদের দেশে অধিকাংশ মানুষ কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় ভগেন। পাকা টমেটো কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। টমেটো ভেতরে থাকা ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। তাই প্রতিদিন সালাতের মাধ্যমে টমেটো খাওয়া শরীরের জন্য উপকারী।

 

টমেটো মুখে দিলে কি হয়-

টমেটো মুখের  ব্ল্যাকহেডস অবাঞ্ছিত দাগ দূর করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। টমেটোর রস ১৫ মিনিট মুখে দিয়ে রাখলে এগুলো দূর হয়। টমেটোর শাঁস এক চামচ বাটার মিনিট পেস্ট করে মুখে দিলে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায় তা অনেক গুণ  দীর্ঘস্থায়ী হয়।। এছাড়া টমেটোর রস মুখে নিয়মিত ব্যবহার করলে বয়সের চাপ বাড়তে দেয় না , রোদে পুরা ত্বকের ক্ষতিকর প্রভাব হতে রক্ষা করে


টমেটো লেবুর ফেসপ্যাক-

ত্বকের যত্নে টমেটো বেশ উপকারী টমেটোতে রয়েছে এন্টি অক্সিডেন্ট অ্যান্টি ফাংগাল ভিটামিন-সি, লাইকোপেন এন্টিব্যাকটেরিয়াল মত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা ত্বকের ব্ল্যাকহেড দূর করার সহ ত্বকের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে,ডার্ক সার্কেল বর্ন স্কিনের দাগ সমস্যা দূর করে টমেটো লেবুর ফেসপ্যাক সম্পর্কে প্রথমে টমেটো পেস্ট করে নিতে হবে তাতে এক চামচ লেবুর রস এবং সমপরিমাণ মধু মিশিয়ে নিতে হবে এরপর টেস্টিং মুখে লাগিয়ে 15 থেকে 20 মিনিট পর্যন্ত রেখে দিতে হবে তারপর পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে ।এতে আপনার ত্বক মোলায়েম নরম হবে এবং ত্বকের সৌন্দর্য উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।

টমেটো খাওয়ার অপকারিতা-

সাধারণত টমেটো হিসাবে আমরা যা খাই অত্যন্ত সুস্বাদু এবং খাবারের রুচি বাড়িয়ে তুলে।এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন- পাশাপাশি অনেক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। এটি অতিবেগুনি রশ্মি প্রতিরোধ করতেও সক্ষম।এছাড়াও খাবারের স্বাদের ভিন্নতা আনতে টমেটোর জড়ি নেই। কিন্তু তারপরও অতিরিক্ত টমেটো খেলে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে আসুন জেনে নেই টমেটোর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া -

এলার্জি-

এলার্জির বিভিন্ন লক্ষণ যেমন হাঁচি কাশি, গলায় খুসখুশি তারপর হাঁচি কাশি এগুলো মানুষের নিত্যদিনের সমস্যা টমেটো খাওয়ার ফলে এগুলো বেড়ে যেতে পারে কারণ টমেটোতে রয়েছে হিস্টামিন নামক যৌগ যা এলার্জি হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ তাই যাদের অ্যালার্জি সমস্যা আছে তারা টমেটো পরিমিত খাওয়াই ভালো।

ত্বকের সমস্যা- 

অনেকেই ত্বকের যত্নে টমেটো আহার করে থাকেন। তবে অতিরিক্ত টমেটো আর কোন অবস্থাতেই ভালো নয় কারণ টমেটোতে রয়েছে লাইক ওপেন নামক যোগ্য যা শরীরের জন্য ৭৫ শতাংশ হলেই ভালো এর অতিরিক্ত হলে লাইকরিডিয়াম সৃষ্টি হতে পারে এতে আপনার ত্বক নিস্তেজ হয়ে যেতে পারে। তাই মাত্রাতিরিক্ত টমেটো না খাওয়াই ভাল


কিডনিতে পাথর-

টমেটো বিদ্যমান ক্যালসিয়াম এবং অক্সালেট সহজে হজম হয় না তাই অনেক ক্ষেত্রে এগুলো জমা হয়ে তিনি পাথর সৃষ্টি করে।

 

শেষকথাঃ 

টমেটো নিঃসন্দেহে একটি স্বাস্থ্যকর সবজি যা ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ। এটি অত্যন্ত বহুমুখী সুস্বাদু ডেজার্ট যা খাবারে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। যাদের প্রায়ই সর্দি কাশি লেগে থাকে তাদের জন্য  টমেটো বেশ কার্য্যকরী। প্রিয় পাঠকটমেটোতে কোন ভিটামিন থাকে তা আমি উপরে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা রাখছি, আপনি  টমেটোর  উপকারিতা সম্পর্কে কিছুটা হলে জানতে পেরেছেন। ধন্যবাদ।

 

 



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url