আখরোট বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা
আখরোট বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত লিখতে চলেছি। যারা জানেন না, তারা এই লেখাটি পড়ে আখরোট বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো জেনে নিবেন। আখরোট বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে কিছু চমকপ্রদ তথ্য এখানে তুলে ধরবো।
আখরোট বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো জানলে রীতিমতো অবাক হবেন। চলুন জেনে নিবো, আখরোট বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা কি কি?
পেজ সূচি:
ভূমিকা:
চমৎকার খাদ্যশস্য আখরোট বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা কি কি, এই বিষয়ে অনেকেই সঠিক ধারনা রাখে না। আজকের এই পোস্টটিতে সহজ ও সাবলীল ভাষায় তুলে ধরা হবে কিছু বিষয়। যেমন : আখরোট সম্পর্কে কিছু তথ্য বলবো, এর ব্যবহার, এছাড়াও জানবেন আখরোট বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা সহ এটি কিভাবে খেতে পারবেন ইত্যাদি।
আখরোট কি:
আখরোট বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানার আগে, আখরোট এর সংক্ষিপ্ত একটু পরিচয় দেয়া দরকার। আখরোট হলো বাদাম জাতীয় একটি ফল। এটি দেখতে গোলাকার। উপরে শক্ত খোসা, ভিতরে বীজ আকারে আখরোট বাদাম পাওয়া যায়।
আখরোট বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কিত এই লেখাটি পড়লে আখরোট এর অসাধারণ পুষ্টিগুণগুলো জেনে যাবেন। হাতের কাছে থাকা এই চমৎকার ফলটি যে কতো উপকারী, তা লিখে শেষ করা যাবে না।
আরো পড়ুন: টমেটোর কি কি রোগ হতে পারে
আখরোটে রয়েছে প্রচুর আমিষ, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, জিঙ্ক, আয়রন, বায়োটিন সহ আরো চমৎকার সব পুষ্টি উপাদান। চলুন এবার বিস্তারিত জেনে নিবো, আখরোট বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো কি কি?
আখরোট বাদামের উপকারিতা:
আমরা আখরোট বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো জানতে চলেছি। প্রথমে এর উপকারিতাগুলো তুলে ধরছি:
১. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ:
প্রতিদিন দু চারটে আখরোট পানিতে ভিজিয়ে খেলে ডায়াবেটিসের রোগীরা অনেক উপকৃত হবেন। আখরোট রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। বিশেষ করে টাইপ 2 ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে আখরোট বেশি কার্যকরী।
২. মানসিক চাপ কমায়:
আখরোটে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড আপনার মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের একটি রিসার্চ অনুযায়ী, প্রতিদিন আখরোট মধুতে মিশিয়ে খেলে শরীরের কিছু হরমোন সক্রিয় হয়ে ওঠে, যেই হরমোন আমাদের মানসিক প্রফুল্লের জন্য দায়ী।
৩. শুক্রাণু বৃদ্ধি:
আখরোট বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানলে আপনি অবাক হয়ে যাবেন, অপকারের তুলনায় আখরোটের উপকারিতা বহু বহুগুণ বেশি। যাদুকরী সব পুষ্টি উপাদান নিহিত এই খাদ্যশস্যে।
আরো পড়ুন: মোবাইল থেকে ডিলিট হওয়া ডাটা কি ফিরে পাওয়া যায়
পুরুষের শুক্রাণু উৎপাদন যতো বেশি হবে, তাঁর সন্তান জন্ম দানের ক্ষমতা ততোই বেশি। আখরোট পুরুষের শুক্রাণু বৃদ্ধিতে যথেষ্ট সহায়ক।
৪. ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণ:
আখরোটে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান, যা ক্যান্সারের কোষগুলো নিস্ক্রিয় করতে সহায়ক। তাই আখরোট ক্যান্সারের একটি প্রতিকার হিসেবে কাজ করতে পারে। নিয়মিত দু চারটা আখরোট খেলে অনেক উপকার পাবেন।
৫. ওজন হ্রাস:
আখরোট বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো একে একে তুলে ধরছি। মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। আখরোট বাদামটি আপনার দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণ করে। এতে থাকা ফাইবার আপনার অতিরিক্ত ক্ষুধা লাগার প্রবণতা কমিয়ে ফেলে। ফলে আপনি বারবার খেতে চাইবেন না, আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
৬. বিপাক নিয়ন্ত্রণ:
আখরোটে থাকা প্রচুর ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, জিঙ্ক, আয়রন শরীরের বিপাক ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে দেহ থাকে সচল ও সুস্থ।
৭. কোলেস্টেরল কমায়:
আখরোটে রয়েছে উচ্চ মাত্রার ফ্যাটি এসিড। এটি দেহের চর্বি ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। প্রতিদিন আখরোট কুচি কুচি করে কেটে চিবিয়ে খেতে পারেন। সকালে খালি পেটে নিয়মিত দুটো আখরোট খেলে এর ফলাফল আপনি নিজেই দেখতে পারবেন।
৮. হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়:
আখরোট খেলে দেহের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়।
৯. ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি:
আখরোট বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো বিস্তারিত বর্ণনা করে যাচ্ছি। আপনার সুস্বাস্থ্যের জন্যই আমাদের এই প্রয়াস। আখরোট আপনার ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে অনেক ভূমিকা রাখে। এতে থাকা ভিটামিন বি ও ক্যালসিয়াম ত্বকের বলিরেখা ও বয়সের ছাপ দূর করতে যথেষ্ট কার্যকরী।
আরো পড়ুন: বন্ধুর বিয়ে নিয়ে স্ট্যাটাস
আপনি আখরোট খেতেও পারেন, পাশাপাশি এটা দিয়ে রুপচর্চাও করতে পারেন। আখরোটের পেস্ট করে সাথে অলিভ অয়েল, নারিকেল তেল, রোজ ওয়াটার সহ কিছু ভেষজ উপাদান মিশিয়ে ফেইস প্যাক তৈরি করতে পারেন। নিয়মিত মুখে লাগালে ত্বক হবে উজ্জ্বল ও মসৃণ। তবে মুখে লাগানোর পূর্বে হাতের চামড়ায় লাগিয়ে দেখবেন, কোনো রিঅ্যাকশন হয় কিনা।
১০. চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি:
ত্বকের সৌন্দর্যের পাশাপাশি আখরোট আপনার চুলের সৌন্দর্যও বৃদ্ধিতে সহায়ক। এতে থাকা বায়োটিন চুলের গোড়া শক্ত করে, চুলকে করে সিল্কি। আপনি আখরোট পেস্ট করে এটা দিয়ে বিভিন্ন রকমের হেয়ার প্যাক তৈরি করে নিতে পারেন।
আখরোট বাদামের অপকারিতা:
আখরোট বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করছি। এতক্ষণ এর উপকারিতা নিয়ে লিখলাম। এবার আখরোটের কিছু অপকারিতা জেনে নিন। যদিও উপকারের তুলনায় এর অপকারিতা নেই বললেই চলে। তবুও অপকারিতাগুলো জেনে রাখা ভালো।
স্বাস্থ্য নিয়ে কোনো ঝুঁকি নেয়া উচিৎ নয়। তাই তো আখরোট বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা দুটোই আপনাদের জানানোর প্রয়োজন মনে করছি। যেকোনো খাবার যতোই পুষ্টিতে ভরপুর থাকুক, অতিরিক্ত খেলে সেটা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
চমৎকার পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ আখরোট বেশি খেলে এলার্জির সমস্যা হতে পারে। অনেকে আবার লিভারের সমস্যাতেও ভোগেন। কালো আখরোটে থাকা ফাইটেসিস উপাদান দেহের আয়রন শুষে নেয়। তাই এই জাতীয় আখরোট বেশি খেলে দেহে আয়রনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এছাড়াও অনেকের হজমের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
শেষ কথা:
আখরোট বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা কি কি, সেগুলো জানলেন। এর অপকারি দিক অতি সামান্য। এর উপকারিতাই বেশি। তাই আখরোট বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো ভালো করে জেনে নিয়ে, নিয়মিত খাদ্য তালিকায় আখরোট রাখুন। সবাই সুস্থ থাকুন। (25957)
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url