মাসিক বন্ধ রাখার কোন ওষুধ আছে কি

মাসিক বন্ধ রাখার কোন ওষুধ আছে কি না আপনি কি জানতে চান তাহলে আই পোস্টটি আপনার জন্য। আজ এই পোস্টে আমি মাসিক বন্ধ রাখার কোন ওষুধ আছে কি না তার বিস্তারিত তথ্য আপনাকে জানাবো। প্রায় সব মেয়েরা মাসিকের কোনো না কোনো সমস্যা থাকে। আপনি যদি মাসিক বন্ধ রাখার কোন ওষুধ আছে কি না জানতে চান তাহলে নিচে পড়ুন।

আপনি জন্মনিয়ন্ত্রণ কিছু পদ্ধতি গুলো ব্যবহার করে আপনার মাসিক কিছু দিন বা কিছু মাসের জন্য বন্ধ করতে পারেন। যাইহোক, একবার যদি আপনার মাসিকের রক্তপাত শুরু হয় তাহলে এই উপায়গুলির কোনোটিই একেবারে পিরিয়ড বন্ধ করতে পারে না। তাহলে চলুন নিচে জেনে নেওয়া যাক মাসিক বন্ধ রাখার কোন ওষুধ আছে কি না সে সম্পর্কে।

সূচিপত্রঃ মাসিক বন্ধ রাখার কোন ওষুধ আছে কি

মাসিক বন্ধ রাখার কোন ওষুধ আছে কি

কখনও কখনও, ভবিষ্যতে ভালো একটি পরিকল্পনার কারণে, আপনি যদি সাময়িকভাবে আপনার মাসিক চক্র বন্ধ করতে চান তাহলে মাসিক বন্ধ রাখার ওষুধ আছে। কিছু ওষুধ রয়েছে যার মাধ্যমে আপনি আপনার পিরিয়ড কয়েক দিন বা মাসের জন্য বন্ধ রাখা যায়। জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি ব্যবহার করে আপনি যদি মাসিক বন্ধ করতে চান তাহলে এটা একটা ভালো উপায় হতে পারে। আপনি যদি জন্মনিয়ন্ত্রণ ওষুধ আপনার পিরিয়ড বন্ধ করতে চান তাহলে এটিকে ইস্ট্রোজেন এবং প্রজেস্টেরনের সংমিশ্রণ দিয়ে শরীরে প্রতিস্থাপন করুন। 

কারণ সবসময় ওষুধ খেলে রক্তে হরমোনের পরিমাণ হঠাৎ করে কমে না, ফলে জরায়ুর আস্তরণ ক্ষয়ে যায় না, ফলে মাসিক বন্ধ হতে দেরি হতে পারে। আপনি যদি জানতে চান মাসিক বন্ধ রাখার কোন ওষুধ আছে কি? তাহলে উত্তর হল আছে এর জন্য কিছু ওষুধ ও উপায় রয়েছে। মাসিক বন্ধ রাখার ওষুধ ও উপায় কি এবং কিভাবে এগুলা কাজ করে তা নিচে বিস্তারিত দেখুন।

Ethinyl estradiol-norethisteron বড়ি

এটা হল একটি ওষুধ যা সাধারণত অনিয়মিত মাসিকের বেশি রক্তপাতের চিকিত্সার জন্য ব্যবহৃত হয়। তবে এটি পিরিয়ড বন্ধ বা কিছু দিনের জন্য বিলম্বিত করতেও ব্যবহার করা যেতে পারে। এই ওষুধটি রক্তপ্রবাহে প্রোজেস্টেরন এবং ইস্ট্রোজেনের বেশি মাত্রা ঠিক রেখে কাজ করে, যা ডিম্বস্ফোটন প্রতিরোধ করে এবং আপনার পিরিয়ড বন্ধ রাখে। ethinyl estradiol-norethisteron বড়ি খাওয়ার পর আপনি দুই থেকে তিন দিন আগে বা পরে কিছু রক্ত দেখতে পেতে পারেন। তবে এই বড়ি কিছু দিন ব্যবহারের পর, জরায়ুতে হালকা রক্ত ক্ষরণের কারণে কিছু রক্তের দাগ হওয়া সাধারণ ব্যাপার তবে তা পিরিয়ড নয়।

জন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ি

আপনি যদি জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খান, তাহলে আপনি আপনার পিরিয়ডকে ১ বা ২ মাসের মত বন্ধ করতে পারেন, যার ফলে এক মাসের জন্য পিরিয়ড হবে না। এটি করার জন্য, আপনাকে জন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ির দুটি প্যাক একটি পর একটি সাথে সাথে আপনাকে নিতে হবে (অর্থাৎ একটা প্যাকের শেষ পিলটি শেষ করার সাথে সাথে একটি নতুন প্যাক শুরু করুন) মনে রাখতে হবে যে কিছু জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি আছে যার মধ্যে শেষ বড়ি হল প্লেসবোস  যা ২৮ দিনের প্যাক।

 আরো পড়ুনঃ মাসিকের ব্যথা কমানোর ৫টি উপায় - মাসিকের ব্যথা কমানোর ৪টি ঔষুধ

এই প্যাকগুলির শেষ বড়িগুলি সাধারণত অন্য রঙের হয়। আপনি যদি ২৮ দিনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল খান তবে আপনার পিরিয়ড বন্ধ করতে চাইলে, প্ল্যাসিবো বা অন্য রং এর পিলগুলি খাওয়া যাবে না এবং পরের প্যাকের প্রথম পিল থেকে খাওয়া শুরু করুন। দুটি জন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ি সাথে সাথে গ্রহণ করলে, ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরনের মাত্রা বেশি থাকবে এবং মাসিক বন্ধ হয়ে যাবে। যদি জানতে চান মাসিক বন্ধ রাখার কোন ওষুধ আছে কি তাহলে এইটা একটা খুব ভালো ওষুধ।

একটানা জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলের ব্যবহার

জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলের একটানা-ব্যবহার বেশ কয়েক মাস ধরে পিরিয়ড বন্ধ করতে পারে, কারণ এটি প্রোজেস্টেরন এবং ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বেশি করে এবং এটি জরায়ুর আস্তরণ ঝরে পড়া বন্ধ করে দেয়।এই ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল দিয়ে মাসিক বন্ধ করলে প্রথম তিন মাসের দিকে একটু হালকা রক্তের দাগ দিতে পারে।

জন্ম নিয়ন্ত্রণ রিং

জন্মনিয়ন্ত্রণ রিং হল একটি ছোট, নমনীয় রিং যা একজন মহিলাদের যোনিতে প্রবেশ কারানো হয়। এটি ৩ সপ্তাহের জন্য সেই জায়গায় থাকে এবং তারপর এটিকে ১ সপ্তাহের জন্য সরিয়ে ফেলা হয় যাতে মাসিক হয়। মহিলারা প্রায় তাদের যোনিতে আংটি পরতে পারে এবং তাদের পিরিয়ড বন্ধ করার জন্য প্রতি ৩-৫ সপ্তাহে একটি নতুন আংটি পরিবর্তিত করতে পারে।

এই কাজ করার জন্য দুটি উপায় রয়েছেঃ

যদি একজন ব্যক্তি মাসের প্রথম দিনে যোনিতে প্রথম রিং লাগান, তবে সবসময় প্রতি মাসের প্রথম দিনে আংটি পরিবর্তন করা উচিত। একজন মহলা ৩, ৪ বা ৫ সপ্তাহের জন্য আংটি পরতে পারেন এবং প্রতি সপ্তাহের একই দিনে আংটি পরিবর্তন করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, যদি বুধবারে রিংটি ঢোকানো হয়, তবে এটি প্রতি ৩, ৪ বা ৫ সপ্তাহ পর বুধবার পরিবর্তন করা উচিত। কারো কারো এটা করার পরেও রক্তপাত হতে পারে। যাইহোক, যদি কেউ দীর্ঘ সময়ের জন্য এই কাজটি করে তাহলে রক্তপাত বন্ধ হয়ে যাবে।

গর্ভনিরোধক ইনজেকশন ও ইমপ্লান্ট

একটি গর্ভনিরোধক ইনজেকশনে প্রোজেস্টেরন থাকে মাসিকের রক্তপাত হ্রাস করতে পারে এবং এমনকি মাসিকের রক্তপাত সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে পারে। মাসিক বন্ধ করতে এই ইনজেকশনগুলি সাধারণত প্রতি তিন মাসে নেওয়া হতে পারে। প্রোজেস্টেরন ইনজেকশন ডিম্বস্ফোটনকে বেড়ে উঠতে বাধা দেয় এবং এটি জরায়ুর আস্তরণকে পরিবর্তন করে, যা গর্ভাবস্থাকে আঁটকে দেয়। কারণ এই ইনজেকশন শরীরে উচ্চ প্রোজেস্টেরনের মাত্রা ঠিক রাখে,  তাইএই পদ্ধতিটি পিরিয়ড বন্ধ করতে পারে।

আরো পড়ুনঃ যে ৬টি কারণে মাসিক দেরিতে হয় - নিয়মিত পিরিয়ড শুরুর উপায়

গর্ভনিরোধক ইমপ্লান্টঃ একটি গর্ভনিরোধক ইমপ্লান্ট করা হলে ক্রমাগত প্রোজেস্টেরন নিঃসরণ করবে, যা শরীরে বেশি হরমোনের মাত্রা সৃষ্টি করে। এটি মাসিকের রক্তপাত কম করবে এবং পিরিয়ড বন্ধ করতে পারে। একটি গর্ভনিরোধক ইমপ্লান্ট ডিম্বস্ফোটন বন্ধ করে এবং যোনিপথের তরল এর পুরুত্ব বাড়ায়, যা শুক্রাণুর জন্য ভিতরে প্রবেশ করা কঠিন করে তোলে। গর্ভনিরোধক ইমপ্লান্ট হল একটি ছোট নমনীয় রড যা মেয়েদের বাহুতে ত্বকের নিচে রাখেন। এটি তিন বছরের জন্য কাজ করে।

কীভাবে স্থায়ীভাবে পিরিয়ড বন্ধ করবেন

স্থায়ীভাবে পিরিয়ড বন্ধ করার জন্য, আপনার জরায়ু অপসারণের জন্য একটি অস্ত্রোপচার পদ্ধতি হতে পারে, যা হিস্টেরেক্টমি নামে পরিচিত। এছাড়াও আর একটি পদ্ধতি রয়েছে যা জরায়ুর একটি ভিতরের একটা অংশ সরানো হয়, যা এন্ডোমেট্রিয়াল অ্যাবলেশন নামে পরিচিত। এই পদ্ধতিগুলি পিরিয়ড বন্ধ করার স্থায়ী পদ্ধতি আর এই দুটার মধ্যে কোনটি আপনার জন্য ভালো হবে তা আপনি ডাক্তারের থেকে জেনে নিন। উপরে আমি মাসিক বন্ধ রাখার কোন ওষুধ আছে কি না জানিয়েছি।

হিস্টেরেক্টমিঃ হিস্টেরেক্টমি হল একটি সার্জারি যা জরায়ু অপসারণের জন্য করা হয়, যা আপনার পিরিয়ড বন্ধ করতে পারে, কিন্তু এর জন্য আপনি কখনও গর্ভবতী হতেও পারবেন না। এই অস্ত্রোপচার পদ্ধতিটি সাধারণত এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যান্সার বা সার্ভিকাল ক্যান্সারের মতো গুরুতর সমস্যাতে করা হয়।

আরো পড়ুনঃ রোজা থাকা অবস্থায় মাসিক হলে করণীয় কী জেনে নিন

এন্ডোমেট্রিয়াল অ্যাবলেশনঃ একটি এন্ডোমেট্রিয়াল অ্যাবলেশন সাধারণত যসব মহিলাদের জন্য যাদের খুব বেশি মাসিক হয়। তবে এই পদ্ধতির পরে, রক্তের পরিমাণ কমে যায় বা সাথে পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যায়। এন্ডোমেট্রিয়াল অ্যাবলেশন করার পরে মাসিকের সাথে সাথে বাচ্চা আদার সম্ভাবনাও বন্ধ হয়ে যায়।

আপনার পিরিয়ড বন্ধ করা কি নিরাপদ?

পিরিয়ড বন্ধ করা সেসব মহিলাদের জন্য উপকারী হতে পারে যাদের পিরিয়ডের সময় অনেক বেশি রক্তপাত হয় এবং এর ফলে অনেক সমস্যাতে পড়ে যেমন ক্র্যাম্প, বেশি রক্তপাত এবং ক্লান্তি, যার ফলে একজন মহিলার শারীরিক ভাবে অনেক ক্ষতি হয়। মাসিক প্রতি মাসে জরায়ুর আস্তরণ থেকে এন্ডোমেট্রিয়াল কোষ বের করে দেয় এবং নিয়মিতভাবে এই প্রক্রিয়ার ফ্রিকোয়েন্সি হ্রাস করা মহিলাদের স্বাস্থ্যের উপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। কিন্তু খুব বেশি দিনের জন্য পিরিয়ড বন্ধ করা কারো কারো জন্য ক্ষতি হতে পারে।

মাসিক বন্ধ রাখার কোন ওষুধ আছে কি - শেষ কথা

মহিলাদের মাসিকের সমস্যা নতুন না অনেক আগে থেকেই অনেক মেয়েদের মাসিকের সমস্যা আছে। অনেক মাসিক হয় না কিন্তু অনেকের মাসিকের সময় বেশি রক্তপাত হয়। তাই এরকম সমস্যার জন্য কিছু চিকিৎসাও করা যেতে পারে। তবে অনেকে কিছু দিন বা কয়েক মাসের জন্য মাসিক বন্ধ করতে চান এর জন্য কিছু ওষুধ ও উপায় রয়েছে যার মাধ্যমে একবারে কিছু দিন বা মাসের জন্য মাসিক বন্ধ করা যেতে পারে। আর আজকের আলোচনার বিষয় হল মাসিক বন্ধ রাখার কোন ওষুধ আছে কি? আশা করি মাসিক বন্ধ রাখার কোন ওষুধ আছে কি না তা উপরের আলোচনা থেকে জানতে পারবেন। ২২৪৯৮

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url