নাকের ব্ল্যাকহেডস দূর করার মাস্ক

নাকের ব্ল্যাকহেডস দূর করার মাস্ক রয়েছে কয়েক ধরনের। আজকে আপনাদের মাঝে আলোচনা করব নাকের ব্ল্যাকহেডস দূর করার মাস্ক সম্বন্ধে। নাকের ব্ল্যাকহেডস দূর করার মাস্ক ভীষণ কার্যকর। চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক নাকের ব্ল্যাকহেডস দূর করার মাস্ক গুলো কি কি।

পোস্ট সূচিপত্রঃ নাকের ব্ল্যাকহেডস দূর করার মাস্ক - ত্বকের যে কোন সমস্যা দূর করে চারকোল মাস্ক

ভূমিকা

প্রায় নিত্যদিন আমরা ব্ল্যাকহেডস এর সমস্যায় পড়ি। ব্ল্যাকহেডসের সমস্যা বিশেষ করে গরমের মৌসুমে হয়ে থাকে। কারণ গরমের মৌসুমে অনেক বেশি ঘাম হয়, অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার ফলে নাকের উপরের অংশে ধুলো-ময়লা জমাট বাঁধে। এইসব ধুলো-ময়লা জমাট বেঁধে নাকের উপর ব্ল্যাকহেডসে পরিণত করে। আর এই জন্যই নিয়মিতভাবে ত্বক পরিচর্যা করা প্রয়োজন। নিত্যদিনের কিছু ব্যবহারিক সামগ্রী দিয়েই ঘরে বসে বানিয়ে নিতে পারবেন, নাকের ব্ল্যাকহেডস দূর করার মাস্ক। চলুন তাহলে দেখে নেই নাকের ব্ল্যাকহেডস দূর করার মাক্ম তৈরির নিয়ম।

নাকের ব্ল্যাকহেডস দূর করার মাস্ক

মধু, লেবু ও চিনি দিয়ে তৈরি মাস্কঃ নাকের ব্ল্যাকহেডস দূর করার মাস্ক, ব্যবহারের নিয়ম- পরিমাণমত মধু, সাথে লেবুর রস এবং সামান্য একটু চিনি এই তিনটি উপকরণ এমন ভাবে তৈরি করবেন, যেন একটি ঘন মিশ্রণ তৈরি হয়। তিনটি উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে নাকের উপরে এই মাস্কটি ব্যবহার করুন। তৈরিকৃত মিশ্রনটি নাকের উপরে ভালোভাবে ম্যাসাজ করতে থাকুন। কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করলে নাকের উপরে জমে থাকা ব্ল্যাকহেডস অনেকটাই কমে যাবে। একই নিয়মে কয়েকদিন ব্যবহার করলেই ব্ল্যাকহেডস একেবারে মিলিয়ে যাবে।

পিল অফ মাস্ক প্রস্তুত প্রণালীঃ নাকের ব্ল্যাকহেডস দূর করার মাস্ক হিসেবে একটি মাস্কই যথেষ্ট, আর সেটি হল পিল অফ মাস্ক। এই মাস্ক তৈরিতে দুই থেকে তিনটি উপকরণ লাগবে। প্রথমত উষ্ণ গরম লিকুইড দুধ লাগবে, সেই সাথে আনফ্লেভারড জেলাটিন, আর লাগবে ভ্যানিলা এসেন্স। যাদের কাছে আনফ্লেভারড জেলাটিন এর গন্ধ পছন্দ নয়, তারা জেলাটিনের সাথে ভ্যানিলা এসেন্স ব্যবহার করতে পারেন।

পিল অফ মাস্ক ব্যবহারের নিয়মঃ নাকের ব্ল্যাকহেডস দূর করার মাস্ক, প্রথমে একটি পরিষ্কার পাত্র নিন, তাতে ২ টেবিল চামচ আনফ্লেভারড জেলাটিন নিন, এর মধ্যে অল্প অল্প করে হালকা গরম দুধ মিশিয়ে নিন। খেয়াল রাখবেন মিশ্রণটি যেন অতিরিক্ত ঘন অথবা অতিরিক্ত পাতলা না হয়। যাদের কাছে আনফ্লেভারড জেলাটিন এর গন্ধ পছন্দ নয়, তারা জেলাটিনের সাথে ভ্যানিলা এসেন্স ২ ফোঁটা ব্যবহার করবেন। আর যাদের কোন কিছুতেই কোনরকম সমস্যা নেই তারা চাইলে তিনটি উপকরণ একসাথে ব্যবহার করতে পারেন। 
এবার উপকরণ গুলি ভালোভাবে মিশিয়ে নিন, মিশ্রণটি বানানোর পরপরই ত্বকে ব্যবহার করে নিবেন। প্রথমে ভালোভাবে মুখ পরিষ্কার করে নিন, এরপর একটি তোয়ালে গরম পানিতে ভিজিয়ে উঠিয়ে নিয়ে অতিরিক্ত পানিটুকু নিংড়ে ফেলে দিন। তারপর গরম পানিতে ভেজানো তোয়ালেটি যে স্থানে ব্ল্যাকহেডস রয়েছে সেই স্থানে চেপে ধরে রাখুন কিছুক্ষণের জন্য। এর ফলে ত্বকের পোরগুলো ওপেন হয়ে যাবে এবং খুব সহজেই ব্ল্যাকহেডস উঠে আসতে সাহায্য করবে। 

এবার তৈরিকৃত মাস্কটি যে স্থানে ব্ল্যাকহেডস রয়েছে সেখানে, মোটা করে বা পুরুভাবে লাগিয়ে রেখে দিন অন্ততপক্ষে ২০ থেকে ২৫ মিনিটের জন্য। অর্থাৎ যতক্ষণ পর্যন্ত না মাস্কটি ভালোভাবে শুকিয়ে যায় ততক্ষণ পর্যন্ত। মাস্কটি শুকিয়ে যাওয়ার পরে আস্তে আস্তে টেনে তুলে ফেলুন। আপনি নিজেই দেখতে পারবেন যে, কতটা ব্ল্যাকহেডস উঠে এসেছে এবং এরপর আপনার ত্বকে একটি ভালো মানের টোনার ব্যবহার করুন। তবে একটি কথা মনে রাখবেন এই মাস্কটি ঘন ঘন ব্যবহার করা যাবে না। যখন মনে হবে নাকে ব্ল্যাকহেডসের পরিমাণ বেড়েছে ঠিক তখনই ব্যবহার করবেন। ঘন ঘন ব্যবহার করলে ত্বকের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।

ত্বকের যে কোন সমস্যা দূর করে চারকোল মাস্ক

ত্বকের যত্নে আমরা বিভিন্ন রকম মাস্ক ব্যবহার করে থাকি। তবে এই চারকোল মাস্কটি ত্বকের জন্য খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেটা হয়তো আপনারা অনেকেই জানেন না। আসুন দেখি দেখে নেই, ত্বকের যে কোন সমস্যা দূর করে চারকোল মাস্ক এর ব্যবহার।

চারকোল মাস্ক ব্যবহারের নিয়মঃ ত্বকের যে কোন সমস্যা দূর করে চারকোল মাস্ক, ত্বকের ভেতর থেকে ময়লা পরিষ্কার করতে ভীষণভাবে সাহায্য করে এই চারকোল মাস্ক। আপনি চাইলে চারকোল পাউডার কিনে বাড়িতে তৈরি করে নিতে পারেন। তবে, এই মাস্ক লাগানোর ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে সেগুলো অবশ্যই মেনে মাস্ক ব্যবহার করবেন।
  • প্রথমত, চারকোল মাস্ক মুখে ব্যবহারের পূর্বে ভালোভাবে মুখ পরিষ্কার করে নিতে হবে।
  • চারকোল মাস্ক ভালোভাবে মুখে লাগিয়ে নেওয়ার পর অবশ্যই সেটা ঠিকভাবে শুকিয়ে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। সম্পূর্ণরূপে শুকানোর পরেই সেটা তুলতে হবে।
  • খেয়াল রাখবেন চোখের চারপাশে এই চারকোল মাস্ক কোনোভাবেই যেন না পৌঁছায়। এতে চোখের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
  • চারকোল মাস্ক শুকিয়ে গেলে ভালোভাবে পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে, মুখে যেন কোনরকম মাস্ক লেগে না থাকে সে বিষয়টি লক্ষ্য রাখতে হবে
  • চারকোল মাস্ক ব্যবহারের পর ত্বকে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে।

ভাবছেন কি করে ব্ল্যাকহেডস দূর করবেন? জেনে নিন

ভাবছেন কি করে ব্ল্যাকহেডস দূর করবেন? জেনে নিন। প্রতিনিয়ত ধুলাবালির কারণে আমাদের ত্বকে ময়লা জমে। আর এই ময়লা গুলো ঠিকমতো পরিষ্কার না করার কারণে ত্বকের উপর অতিরিক্ত তেল জমতে থাকে, একসময় তা বাতাসের সংস্পর্শে এসে ব্ল্যাকহেডসে পরিণত হয়।
ত্বক থেকে ব্ল্যাকহেডস দূর করতে চাইলে প্রতিনিয়ত ত্বক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। কারণ ত্বকে ধুলাবালি-ময়লার কারনে শুধুমাত্র ব্ল্যাকহেডস হয় এমনটা নয়, সেই সাথে ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে যায়। ব্ল্যাকহেডস থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় জানুন

ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখাঃ ত্বককে সুস্থ রাখতে ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখা খুবই প্রয়োজন। আর তাই প্রতিদিন ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ক্রিম ব্যবহার করা উচিত। এর ফলে ত্বক সুস্থ থাকবে এবং ব্ল্যাকহেডস হবার সম্ভাবনা কমে যাবে।

ব্ল্যাকহেডস দূর করতে ডিমের সাদা অংশের ব্যবহারঃ ভাবছেন কি করে ব্ল্যাকহেডস দূর করবেন? জেনে নিন, ডিমের সাদা অংশ ফেসিয়াল মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ব্যবহারের নিয়ম- একটি ডিম ভেঙে কুসুম আলাদা করে রেখে দিন, ডিমের সাদা অংশ একটি টিস্যু পেপারে নিয়ে নাকের উপর লাগিয়ে রাখুন। ভালোভাবে শুকিয়ে গেলে এক টানে তুলে ফেলুন এভাবে খুব সহজেই ব্ল্যাকহেডস দূর করা সম্ভব।

ব্ল্যাকহেডস দূর করতে কফির সঙ্গে নারিকেল তেলের মাস্কঃ আমরা জানি কফি ত্বক পরিষ্কার করতে খুব ভালো ভূমিকা রাখে। সেই সাথে ব্ল্যাকহেডস দূর করতে করতেও ব্যবহার করা হয়, এর জন্য নিতে হবে নারিকেল তেল এবং কফি ।
দুটি উপাদান ভালোভাবে মিশিয়ে প্রতিদিন গোসলের পূর্বে নাকের উপরে ব্ল্যাকহেডসের জায়গায় লাগিয়ে রাখুন এবং আস্তে আস্তে ম্যাসাজ করতে থাকুন। প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ মিনিট ম্যাসাজ করুন, কিছুদিনের মধ্যেই আপনার ব্ল্যাকহেডস গুলো একেবারে রিমুভ হয়ে যাবে।

নাকের ব্ল্যাকহেডস দূর করার মাস্কঃ উপসংহার

সাধারণত ত্বকে ময়লা বা জীবাণুর কারণেই ব্ল্যাকহেডস হয়ে থাকে। আর এই ব্ল্যাকহেডস দূর করার জন্য বেশ কয়েকটি মাস্ক নিয়ে আলোচনা করেছি এই পোস্টে। এ নিয়ম ফলো করে আপনারা ঘরে বসে নাকের ব্ল্যাকহেডস দূর করার মাস্ক তৈরি করে নিতে পারেন। এতে করে আপনাদের নাকের ব্ল্যাকহেডস দূর হয়ে যাবে। আশা করি আপনারা আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়েছে, ধন্যবাদ। ২৫২৪২

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url