গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারের চিকিৎসা

গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারের চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে সঠিক জায়গাতে এসেছেন। আমরা কম বেশি সকলেই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগে থাকি। গ্যাস্ট্রিক এর সমস্যা থেকে আমাদের গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার হয়। এক্ষেত্রে গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারের চিকিৎসা সম্পর্কের জেনে রাখা উচিত। এই আর্টিকেলে গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারের চিকিৎসা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে।

তাহলে চলুন দেরি না করে ঝটপট গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারের চিকিৎসা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

সূচিপত্রঃ গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারের চিকিৎসা

পাকস্থলী ক্যান্সারের কারণ

সকলে জানি যে ক্যান্সার হল মরণব্যাধি রোগ। ক্যান্সার হলে মানুষ অর্ধেক চিন্তাতেই মরে যায়। ক্যান্সারের বিভিন্ন ধরনের রয়েছে এগুলোর মধ্যে পাকস্থলী ক্যান্সার, গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার অন্যতম। বিশেষ করে যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে তাদের এই সমস্যা থেকে আলসার এবং আলসার থেকে গ্যাস্টিক ক্যান্সার হতে পারে। আমরা গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারের চিকিৎসা সম্পর্কে জানার আগে পাকস্থলী ক্যান্সারের কারণ সম্পর্কে জানব।

আরো পড়ুনঃ টমেটোর কি কি রোগ হতে পারে

গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারকে অনেকেই পাকস্থলী ক্যান্সার বলে থাকে। আপনারা যারা পাকস্থলী ক্যান্সারের কারণ সম্পর্কে জানেন না সাধারণত তাদের জন্য এখন পাকস্থলী ক্যান্সারের কারণ আলোচনা করা হবে।

১। ৫০ এর বেশি বয়সী মানুষদের পেটের ক্যান্সার বেশি হয়ে থাকে। বিশেষ করে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকেই পেটের ক্যান্সার হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে মহিলাদের থেকে পুরুষদের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

২। যে সকল পুরুষেরা অতিরিক্ত পরিমাণে ধূমপান করে সাধারণত তাদের গ্যাসের সমস্যা বেশি হয় এবং পাকস্থলী ক্যান্সার হয়ে থাকে।

৩। অতিরিক্ত পরিমাণে মদ্যপান করার ফলে পাকস্থলীর সমস্যা হয় যার ফলে একসময় এটি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে যায়।

৪। বংশগত কারণে পাকস্থলী ক্যান্সার হতে পারে। যদি পরিবারের কোনো সদস্যের আগে পাকস্থলী ক্যান্সারে আক্রান্ত থাকে তাহলে পরবর্তী যেকোনো সদস্য এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

৫। অতিরিক্ত পরিমাণে নোনতা খাবার আচার যুক্ত শাকসবজি এবং কম ফলমূল এবং শাকসবজি খেলে পাকস্থলী ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।

৬। এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি সংক্রমণ হলে আমাদের পেটে এ ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়। সাধারণত এই ব্যাকটেরিয়া পাকস্থলীর ক্ষতি করে থাকে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।

পাকস্থলী ক্যান্সারের লক্ষণ

কোন ব্যক্তি যদি পাকস্থলী ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় তাহলে প্রাথমিকভাবে বেশ কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। আবার অনেকের ক্ষেত্রে এই লক্ষণগুলো নাও দেখা যেতে পারে। গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারের চিকিৎসা করানোর আগে অবশ্যই আমাদেরকে লক্ষণগুলো সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। যেহেতু ক্যান্সার একটি মরণব্যাধি রোগ সেহেতু আমাদের অবশ্যই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় গুলো খুঁজে বের করতে হবে। পাকস্থলী ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন এই বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য পাকস্থলী ক্যান্সারের লক্ষণ সম্পর্কে জানতে হবে।

পাকস্থলী ক্যান্সারের লক্ষণঃ

১। পেটে প্রচন্ড পরিমাণে ব্যথা হতে পারে।

২। ব্যথার কারণে অনেক অস্বস্তি বোধ হতে পারে।

৩। অনেক সময় বমি বমি ভাব অথবা বমি হতে পারে।

আরো পড়ুনঃ মাসিক বন্ধ রাখার কোন ওষুধ আছে কি

৪। অল্প খাবার খাওয়ার পরেই পেট ভরে গেছে এমন মনে হওয়া।

৫। ক্ষুধা কমে যাওয়া এর সাথে সাথে আমাদের শরীরের ওজন কমে যাওয়া।

৬। একটু ক্লান্ত হয়ে পড়া।

৭। যে কোন খাবার গিলতে অসুবিধা হওয়া এমনকি পানিও

৮। মলের মধ্য দিয়ে রক্ত পড়া অথবা কালো মাল বের হওয়া।

৯। আমাদের ত্বক এবং চোখ হলুদ হয়ে যাওয়া অর্থাৎ জন্ডিসের লক্ষণ।

গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারের চিকিৎসা

আপনার যদি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকে তাহলে এটিকে অবহেলা করবেন না অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন। কারণ ধীরে ধীরে এ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকেই পেটের মধ্যে গ্যাস্টিক ক্যান্সার তৈরি হয়ে যায়। যদি কখনো এই সমস্যাটি হয় তাহলে অতিরিক্ত আতঙ্কিত না হয়ে গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারের চিকিৎসা করানোর চেষ্টা করুন। কারণ বর্তমানে চিকিৎসা পদ্ধতিতে গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারের চিকিৎসা নির্ভর করবে আপনার ক্যান্সার কোন পর্যায়ে রয়েছে তার উপর।

  • সার্জারি
  • কেমোথেরাপি
  • রেডিয়েশন থেরাপি

সার্জারি -  যদি পাকস্থলী ক্যান্সার একেবারে শেষ পর্যায়ে পৌঁছে যায় তাহলে সার্জারি করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। পাকিস্তানি ক্যান্সার অর্থাৎ গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারের চিকিৎসা হলো পেটের কিছু অংশ অথবা পেটের সম্পূর্ণ অংশ অপসারণ করা যা অস্ত্রোপচার এর মাধ্যমে করা হয়ে থাকে।

কেমোথেরাপি - সাধারণত প্রতিটি ক্যান্সারের চিকিৎসায় কেমোথেরাপি দেওয়া হয়। কেমোথেরাপি দেওয়ার ফলে রোগীর ক্যান্সার আক্রান্ত কোষ গুলোকে ধ্বংস করা হয়। সাধারণত অষ্টপ্রচার করার আগে অথবা পরে ক্যান্সারের কোষগুলোকে ধ্বংস করার জন্যই কেমোথেরাপি দেওয়া হয়ে থাকে।

রেডিয়েশন থেরাপি - কেমোথেরাপির মতো রেডিয়েশন থেরাপি এমন একটি চিকিৎসা যার মাধ্যমে ক্যান্সার আক্রান্ত কোষগুলোকে উচ্চশক্তির বিকিরণ দ্বারা ধ্বংস করে দেওয়া হয়। এই চিকিৎসাটি কেমোথেরাপির পর অথবা আগে যখন সার্জারি করা হয় তখন দেওয়া হয়ে থাকে। যার ফলে পেটের ভেতরকার ক্যান্সার আক্রান্ত কোষগুলো ধ্বংস হয়ে যায়।

গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার প্রতিরোধ করার উপায়

আমরা সকলেই চাই আমরা যেন ক্যান্সার থেকে দূরে থাকি। ক্যান্সার আক্রান্ত হলে আমাদের মৃত্যু অনিবার্য কারণ এখনো ক্যান্সারের সঠিক চিকিৎসা গুলো বের হয়নি। সাধারণত তাই গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার প্রতিরোধ করার উপায় রয়েছে। যদিও সম্পূর্ণভাবে গ্যাস্টিক ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব নয় তবুও চেষ্টা করা যায় যেটুকু সম্ভব সেটুকুই আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।

১। প্রতিদিন স্বাস্থ্যকর খাবার খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। এই খাদ্য তালিকায় যেন প্রচুর পরিমাণে ফল এবং থাকে এ বিষয়টির লক্ষ্য রাখতে হবে।

আরো পড়ুনঃফজরের নামাজ কয় রাকাত

২। যেহেতু ধূমপান এবং মদ্যপান করার জন্য গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার হয়ে থাকে সেহেতু আমাদেরকে অতিরিক্ত ধূমপান এবং মদ্যপান করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

৩। অতিরিক্ত ভাজাপোড়া এবং তেল জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে না। কারণ এ সকল খাবার খাওয়ার ফলে আমাদের গ্যাস্টিকের সমস্যা বৃদ্ধি পায় যার ফলে আলসার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

৪। খাবার তালিকায় যতটা সম্ভব শাক-সবজি রাখতে হবে। প্রতিদিন যদি শাকসবজি এবং পুষ্টিকর খাবার খেতে পারেন তাহলে এটি আপনার গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার প্রতিরোধ করবে।

আমাদের শেষ কথাঃ গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারের চিকিৎসা

প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে পাকস্থলী ক্যান্সারের কারণ, পাকস্থলী ক্যান্সারের লক্ষণ, গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সারের চিকিৎসা, গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যেহেতু আমরা কম বেশি সকলেই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগে থাকি তাই আমাদেরকে এ বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত।

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের তথ্যমূলক আর্টিকেল আরো পড়তে এবং স্বাস্থ্যকর আর্টিকেল আরো জানতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে থাকুন। কারণ আমরা নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল আমাদের ওয়েব সাইটে প্রকাশ করে থাকি। ২০৭৯১

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url