মসুর ডালের উপকারিতা ও ঔষধি গুণাগুণ

মসুর ডালের উপকারিতা ও ঔষধি গুণাগুণ নিয়ে আমাদের আজকের এই লেখাটি। মসুর ডাল একটি পুষ্টিকর খাদ্যশস্য। মসুর ডালের উপকারিতা ও ঔষধি গুণাগুণ জানতে চাইলে এই পোস্টটি পড়ুন। এই লেখাটিতে মসুর ডালের উপকারিতা ও ঔষধি গুণাগুণ বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।

মসুর ডালের উপকারিতা ও ঔষধি গুণাগুণ বলে শেষ করা যাবে না। চলুন জেনে নিবো, মসুর ডালের উপকারিতা ও ঔষধি গুণাগুণ কি কি।

পেজ সূচি:

ভূমিকা:

মসুর ডাল হলো একটি পুষ্টিকর খাদ্যশস্য যা ভারতীয় উপমহাদেশে প্রচুর চাষ হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম- Lens Culinaris। ইংরেজি নাম - Red Lentil। উচ্চ প্রোটিন ও ভিটামিন সমৃদ্ধ মসুর ডালের উপকারিতা ও ঔষধি গুণাগুণ জানলে অবাক হবেন। বাঙালির খাদ্যতালিকায় মসুর ডাল থাকবে না, এটা ভাবাই যায় না।

মসুর ডালের খাদ্যগুণ, ভেষজ উপকারিতা এবং রুপচর্চায় এর জুড়ি নেই। আসুন বিস্তারিত জানি, মসুর ডালের উপকারিতা ও ঔষধি গুণাগুণ।

মসুর ডালের উপকারিতা:

মসুর ডালের উপকারিতা ও ঔষধি গুণাগুণ বিস্তারিত বর্ণনা করার প্রথম ধাপে জেনে নিবো এর অসাধারণ খাদ্যগুণ বা উপকারিতা। চিকিৎসা বিজ্ঞানে মসুর ডালের উপকারিতা ও ঔষধি গুণাগুণ নিয়ে অসংখ্য আর্টিকেল ও জার্নাল লেখা হয়েছে। প্রকাশিত হয়েছে চমৎকার কিছু তথ্য। সেগুলো এখানে তুলে ধরছি:

১. দেহের বৃদ্ধি:

মসুর ডাল আমিষের একটি ভরপুর উৎস। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় মসুর ডাল দেহের আমিষের ঘাটতি পূরণ করে। আমিষ দেহের বৃদ্ধি ও হাড় গঠনে সাহায্য করে।

২. ওজন কমানো:

মসুর ডালে রয়েছে উচ্চ মাত্রার ফাইবার। ফাইবার শর্করা বিপাক নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে দেহের ওজন বাড়তে পারে না।

৩. মাংসপেশী সবল ও সুস্থ রাখা:

উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ মসুর ডাল দেহের মাংসপেশী সবল করে। দেহকে রাখে সুস্থ ও সচল।

আরো পড়ুন: আদা খাওয়ার ১৫টি উপকারিতা ও ৭টি ক্ষতিকর দিক

৪. স্থুলতা কমানো:

মসুর ডাল আয়রনের চমৎকার একটি উৎস হতে পারে। আয়রন দেহের বিপাকীয় কাজে অবদান রাখে। ফলে দেহকে অধিক স্থুলতা থেকে রক্ষা করে।

৫. হার্ট সুস্থ রাখা:

শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল অপসারণ করে মসুর ডাল। এর ফলে হার্ট থাকে সুস্থ ও সচল।

মসুর ডালের ঔষধি গুণাগুণ:

মসুর ডালের উপকারিতা ও ঔষধি গুণাগুণ বলে শেষ করা যাবে না। এই পোস্টে চমকপ্রদ বৈজ্ঞানিক তথ্য দিয়ে তুলে ধরা হবে মসুর ডালের উপকারিতা ও ঔষধি গুণাগুণ কি কি। এবার জেনে নেয়া যাক, মসুর ডালের কিছু ঔষধি গুণাগুণ। কোন কোন সমস্যায় মসুর ডাল কাজ করে সেগুলো তুলে ধরছি:

১. পেট ফাঁপা:

যাদের গরমে পেট ফাঁপার সমস্যা রয়েছে, তারা মসুর ডাল পানিতে ভিজিয়ে রেখে নরম হলে, আধাকাঁচা অবস্থায় চিবিয়ে খেতে পারেন। খেতে একটু বিস্বাদ লাগবে। কিন্তু অনেক উপকার পাবেন।

২. গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা:

মসুর ডাল ভিজানো এক কাপ পানি মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। গ্যাস্ট্রিকের উপশম হবে। মসুর ডালের উপকারিতা ও ঔষধি গুণাগুণ কি কি, পড়ুন এবং জানতে থাকুন।

৩. ওজন নিয়ন্ত্রণ:

যাদের দেহ স্থুল, ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না, তাদের জন্য মসুর ডাল বিশেষ উপকারী। মসুর ডালের বড়া হালকা তেলে ভেজে খেতে পারেন। এর সাথে অন্যান্য কিছু সবজি যেমন- লেটুস পাতা, পুদিনা পাতা, ধনে পাতা এগুলো মিশিয়ে সালাত বা বড়া তৈরি করে প্রতিদিন খেলে শরীরে প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেলস পায়। তাতে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।

আরো পড়ুন: কমলা খাওয়ার ৭টি উপকারিতা ও অপকারিতা

৪. শরীর দুর্বল:

এক গ্লাস পানির মধ্যে এক মুঠো মসুর ডাল, দুটো তুলসী পাতা, কয়েকটি পুদিনা পাতা সারা রাত ভিজিয়ে রাখুন। সকালে খালিপেটে শুধু পানিটুকু পান করবেন। শরীর সবল ও চাঙা হবে।

৫. মাথা ধরা:

মসুর ডাল সিদ্ধ করে ছেকে সেই পানি প্রতিদিন পান করা। উচ্চ প্রোটিন ও ক্যালরি সমৃদ্ধ এই পানি মাথা ধরা রোগ নির্মূল করে।

রুপচর্চায় মসুর ডাল:

মসুর ডালের উপকারিতা ও ঔষধি গুণাগুণ নিয়ে প্রতিনিয়ত গবেষণা চালানো হচ্ছে। চিকিৎসা বিজ্ঞান ও ভেষজ বিজ্ঞান মসুর ডালকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। তাই মসুর ডালের উপকারিতা ও ঔষধি গুণাগুণ সম্পর্কে জানার প্রয়োজনীয়তা কতো, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

এবার জানবো রুপচর্চায় মসুর ডালের যাদুকরী গুণাগুণ:

১. ব্রণ কমানো:

সিদ্ধ মসুর ডালের পেস্টের সাথে মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে পুরো মুখে লাগান। সপ্তাহে দুদিন এই ফেসপ্যাক ব্যবহার করলে ব্রণ কমে যাবে।

২. ত্বকের কালো দাগ ও মেছতা:

যাদের ত্বকে ছোপ ছোপ কালো দাগ কিংবা মেছতা রয়েছে, তারা নিয়মিত কাঁচা মসুর ডালের পেস্টের সাথে চিনি, লেবুর রস ও দুধ মিশিয়ে দাগের স্থানে লাগাতে পারেন। সপ্তাহে দুদিন বা তিনদিন করে লাগাবেন। বিশেষ উপকার হবে।

৩. ডার্ক সার্কেল:

হাতের কাছে থাকা মসুর ডালের উপকারিতা ও ঔষধি গুণাগুণ বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। চোখের চারপাশে ডার্ক সার্কেল থাকলে নিয়মিত মসুর ডাল ভিজানো পানি তুলো দিয়ে মাসাজ করতে পারেন। কালো দাগ দূর হবে।

আরো পড়ুন: থানকুনি পাতার ১০টি উপকারিতা

৪. রোদে পোড়া ত্বক:

মসুর ডাল, মধু, এলোভেরা জেল, লেবুর রস একসাথে পানি দিয়ে মিক্সড করে একদম মিহি করুন। এরপর ফ্রিজে রাখুন ছোটো ছোটো আইস কিউব আকারে। প্রতিদিন বাহির থেকে আসার পরে সেই আইস কিউব লাগান।

৫. শুষ্ক ও ফাটা ত্বক:

যাদের ত্বক অত্যধিক শুষ্ক ও ফেটে যায়, তারা সিদ্ধ মসুর ডালের সাথে কমলার রস, দুধ, মধু একসাথে মিশিয়ে পেস্ট করে চামড়ায় লাগাতে পারেন। সপ্তাহে তিনদিন লাগালে ত্বকের জেল্লা ফিরে আসবে।

পরিশেষে:

সত্যি বলতে, মসুর ডালের উপকারিতা ও ঔষধি গুণাগুণ নিয়ে অনেক কিছু জানার আছে। স্বল্প পরিসরে সবকিছু তুলে ধরলাম। আশা করি উপকৃত হবেন। মসুর ডালের উপকারিতা ও ঔষধি গুণাগুণ জেনে আপনিও নিয়মিত খাদ্যতালিকায় এটি রাখুন। সুস্থ থাকুন। (25957)

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url